ক্লান্ত পরিশ্রমের পরেও রাতে একটানা ভালো ঘুম না হওয়া, বিছানায় এ পাশ-ও পাশ
করেই রাতটুকু কাটিয়ে দেওয়া, ঘুমের ভাব থাকলেও ঘুম না আসা- এ সব সমস্যা
আজকাল ঘরে ঘরে। জীবনযাপনের জটিলতা ও খাদ্যাভ্যাসের অনিয়ন্ত্রণই অনিদ্রার
অসুখকে ডেকে আনে বলে মত চিকিৎসকদের।
একটু নিশ্চিন্তের ঘুমের জন্য ওষুধ, ঘরোয়া উপায় বা খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন-
কত কিছুই না করে থাকি আমরা। ঘুমের ওষুধ একটানা খেয়ে যাওয়া খুব ক্ষতিকর। তাই
ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু কিছু যোগব্যায়াম আয়ত্তে আনতে পারলে অনিদ্রার
অসুখ সারতে পারে সহজেই। ওষুধ বা কড়া ডায়েটের চোখ রাঙানি ছাড়াও কম ঘুমের
সমস্যাকে আয়ত্তে রাখা সম্ভব এই সব যোগাসনে।
এই যোগাসনের নাম বাউন্ড অ্যাঙ্গেল বা সুপ্ত বদ্ধকোণাসন। এ আসন সাধারণত
গর্ভবতী মহিলাদের পেলভিক অঞ্চলকে বিস্তৃৃত হতে সাহায্য করে ঠিকই, কিন্তু এই
আসন যে কোনো মানুষেরই মানসিক চাপ, হতাশা কাটাতেও খুব কার্যকর। তাই অনিদ্রা
দূর করতে এর জুড়ি মেলা ভার।
চিত হয়ে টানটান করে শুয়ে পড়ুন। এবার কাঁধের সমান্তরাল করে হাঁটু ভাঁজ করুন।
পায়ের পাতা দুটো সামনের দিকে মুখ করে নমস্কারের ভঙ্গিতে জুড়ে দিন। পায়ের
পাতার ধারগুলো কিন্তু মেঝে ছুঁয়ে থাকবে। হাত দুটোকে এবার মাথার দিকে
লম্বালম্বি ছড়িয়ে দিন। হাতও মেঝেতেই থাকবে। কয়েক সেকেন্ড এই অবস্থায় থাকুন।
১০-১৫ বারে এক একটা সেট তৈরি করুন।
এর সঙ্গে যোগ করুন রিসাইক্লিং হিরো বা সুপ্ত বীরাসন। কাঁধ, মেরুদণ্ড,
তলপেটের পেশির নাড়াচাড়া হয় এই আসনে। ভাল থাকে পা, জঙ্ঘা ও পায়ের পাতা।
মানসিক চাপ মুক্তিতেও এই আসন ভীষণ কার্যকর।
নিল ডাউন হয়ে বসুন মেঝেতে। এমনভাবে পায়ের পাতা দু’টি রাখবেন যেন তা থাইয়ের
একটু বাইরের দিকে বেড়িয়ে থাকে। কিন্তু হাঁটু দুটো কাছাকাছি থাকবে। হাত দুটো
ছড়িয়ে দিন হাঁটুর উপর। পায়ের পাতার উপর ভর দিয়ে ধীরে ধীরে শরীরকে পিছনের
দিকে ঝুঁকিয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়ার চেষ্টা করুন। হাত দুটো ছড়িয়ে দিন শরীরের
দু’পাশে। ধরে রাখুন ১৫ সেকেন্ড।
কেবল ঘুমের সময়কে ঠিক রাখতেই নয়, শরীরকে টক্সিনমুক্ত রাখতে ও পেটের মেদ
কমাতে এই আসন খুবই কার্যকর। ফরোয়ার্ড বেন্ট সিটিং বা পশ্চিমোত্তানাসন নামে
এই পরিচিত এই আসনটি প্রতিদিন ১০ সেকেন্ড করে ১০-১২ বার অভ্যাস করলে
অনিদ্রার সমস্যা কমবে অনেকটাই। দেখে নিন কীভাবে করবেন।
পা দুটো লম্বালম্বি ছড়িয়ে দিন এবার দু’হাত দিয়ে পায়ের পাতা ছুঁয়ে শরীরকে
সামনের দিকে ঝোঁকান। চেষ্টা করুন হাঁটু ভাঁজ না করেই নাক দিয়ে হাঁটু স্পর্শ
করতে। অভ্যাস না থাকলে প্রথমেই পারবেন না। কিন্তু যত দিন এগোবে, চেষ্টা
চালিয়ে গেলে এক সময় দেখবেন এমনটা সহজেই পারছেন। ও হ্যাঁ, দু’হাতের কনুই যেন
মেঝেতে ঠেকে থাকে।
কর্মক্ষেত্র থেকে বাড়ি ফিরে হালকা কিছু খেয়ে খানিক বিশ্রাম নিন। তারপর
মিনিট কয়েক এই যোগাসন অভ্যাস করলে শরীরের মেদ যেমন ঝরবে, তেমনই বাড়বে পায়ের
পেশি ও হ্যামস্ট্রিংয়ের ক্ষমতা। তার সঙ্গে রাতের ঘুমটাও হবে জবরদস্ত। সহজ
আসনটির পদ্ধতি দেখে নিন।